প্রশ্ন: আমি অনেকগুলো রোযা রেখেছি আযান পর্যন্ত সাহরি খেয়ে। আমার রোযা কী হবে?
بسم الله والحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله
উত্তর: যদি আপনি সুবহে সাদিক হওয়ার পরও খাওয়া অব্যাহত রেখেছেন বলে নিশ্চিত হন, তাহলে এ ক্ষেত্রে আপনার রোযা হবে না৷ এ অবস্থায় যত রোযা রেখেছেন, সবগুলো রোযার কাযা রাখতে হবে৷
وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْل
অর্থ: আর পানাহার কর যতক্ষণ না কালোরেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়।
(সূরা বাকারা: ১৮৭)
وإذا تسحر وهو يظن أن الفجر لم يطلع فإذا هو قد طلع (إلي قوله) وعليه القضاء.
অর্থ: ফজর হয় নি মনে করে যদি সাহরি খেতে থাকে অথচ ইতোমধ্যেই সুবহে সাদিক হয়ে যায়, তাহলে এই রোযার কাযা রাখতে হবে৷ (আল-হিদায়া, কিতাবুস সাওম: ১/২০৫)
(২) রোযাবস্থায় টুথপেস্ট লাগিয়ে ব্রাশ করলে গলায় তার স্বাদ অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ তাই মাকরুহ হবে৷ তবে যদি নিশ্চিতভাবে পেস্টের কোনো অংশ গলা হয়ে পেটে চলে যায়, তাহলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে৷ তাই রোযাবস্থায় টুথপেস্ট, টুথপাউডার, মাজন ইত্যাদি দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা ঠিক নয়৷ মেসওয়াক বা খালি ব্রাশ দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করতে কোনো সমস্যা নাই৷
প্রখ্যাত তাবেয়ী আতা রাহিমাহুল্লাহ বলেন:
وَلَا يَمْضُغُ الْعِلْكَ فَإِنِ ازْدَرَدَ رِيقَ الْعِلْكَ لَا أَقُولُ: إِنَّهُ يُفْطِرُ وَلَكِنْ يُنْهَى عَنْهُ.
অর্থ: আর রোযাবস্থায় কোনো ব্যক্তি যেন কোনো কিছু না চিবায়। যদি চিবানোর কারণে তার রস গিলে ফেলে, তাহলে তার ক্ষেত্রে আমি বলি নি যে, সে রোযা ভঙ্গ করল, বরং তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। (বুখারী হাদীস নং-২০১৮)
وكره له ذوق شيئ وكذا مضغه بلا عذر.
অর্থ: কোনো জিনিসের স্বাদ অনুভব হলে বা চিবালে রোযা মাকরুহ হবে৷ (আদ্দুররুল মুখতার: ৩/৩৯৫)
আপনার জন্য করণীয় হচ্ছে, অনুমান করে যে রোযাগুলো ভেঙ্গে গেছে বা হয় নি বলে প্রবল ধারণা হয়, পরবর্তীতে সেগুলোর কাযা করে নিবেন৷ তবে শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে রোযা হয় নি বলে অস্থির হওয়া ঠিক হবে না৷ নিশ্চিত বা প্রবল ধারণা হলেই কেবল কাযা আদায় করবেন৷
এসব নিয়ে মানসিক অস্থিরতার কোনো প্রয়োজন নেই৷ আল্লাহ তাআলা তো এর বিকল্প কাযা রেখেছেন৷ যেহেতু ইচ্ছাকৃত করেন নাই, তাই কাযা আদায় করে নিলে আল্লাহ তাআলা মাফ করবেন৷ আপনার এই অস্থিরতা ওয়াসওয়াসা থেকেও হতে পারে৷ তাই ওয়াসওয়াসাকে জায়গা দেওয়া যাবে না৷
واللہ تعالٰی أعلم بالصواب.
উত্তর প্রদানে—মুফতি জিয়াউর রহমান
Leave a Reply